বেদ ও মানবিকতা নিয়ে মুসলিমের মিথ্যাচারের খণ্ডণ

0

 মুসলিমের মিথ্যাচারের খণ্ডণ 

ইদানিং দেখা যায় ম্লেচ্ছরা বেদের মানবিকতা নিয়ে বিবিধ আক্ষেপ করে বেড়ায়। তাদের মূল দাবী- কুরআনে মানবিকতার কথা আছে, কিন্তু বেদে কোথাও নেই। বেদ থেকে এটা দেখান, সেটা দেখান বা এটা/সেটা আছে কিনা? তেমনই এক ম্লেচ্ছের ভিডিও আমাদের নজরে এসেছে, প্রথমে ভিডিও ক্লিপটি দেখা যাক সে কি বলে-

সে তার কথিত ধর্মের জ্ঞানের পরিধি দ্বারা কয়েকটি প্রশ্ন নামের আক্ষেপ করেছে। যথা-

১.আপনাদের বেদ কি পৃথিবীর সকল মানুষকে এক মর্যাদা দিয়েছে?

২.একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করলে পুরো পৃথিবীর মানুষকে হত্যা করা হবে এমন কিছু বেদে বলা হয়েছে কিনা?

৩.যে মানুষকে আল্লাহ্ তায়ালা মর্যাদা দিয়েছে সেই মানুষকে হত্যা করা যাবেনা বেদে এমন বলা হয়েছে কিনা?

৪.খুনোখুনি, হত্যা-হত্যি, মারা-মারি করা যাবেনা এমন কিছু বেদে বলা হয়েছে কিনা? 

                                    "জবাব"

১. বেদে সকল মনুষ্যকেই, মনুষ্য হিসেবে সমান মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। যথা-

অ॒জ্যে॒ষ্ঠাসো॒ অক॑নিষ্ঠাস এ॒তে সং ভ্রাত॑রো বাবৃধুঃ॒ সৌভ॑গায়। যুবা॑ পি॒তা স্বপা॑ রু॒দ্র এ॑ষাং সু॒দুঘা॒ পৃশ্নিঃ॑ সু॒দিনা॑ ম॒রুদ্ভ্যঃ॑ ॥(ঋগ্বেদ-৫/৬০/৫)

ভাষ্য : (এতে) এই মনুষ্য, সমস্ত বিদ্বান্ এবং বীরগণ (অজ্যেষ্ঠাসঃ) পরস্পর একে অপর হইতে বড় নহে এবং (অকনিষ্ঠাসঃ) একে অপর হইতে ছোটও নহে, এক সমান, মান-আদর, পদাধিকারে যুক্ত হয়ে (ভ্রাতরঃ) ভ্রাতার ন্যায় একে অপরকে পুষ্ট করতে থেকে (সৌভাগ্য) সৌভাগ্য অর্থাৎ উত্তম ঐশ্বর্য্য প্রাপ্ত করার জন্য (ববৃধুঃ) খুব প্রযত্ন করে। (এষাম্) তাদের (পিতা) পালনকারী (রুদ্রঃ) দুষ্টদের রোদনকারী ও তাদের দূর করতে সমর্থ এবং উত্তম উপদেষ্টা এবং (য়ুবা) সদা বলশালী (সু-অপাঃ) উত্তম সুখজনক কর্মকারী বা (স্ব-পাঃ) নিজ মিত্রবৎ অথবা পরিজনদের অথবা ঐশ্বর্য্যের রক্ষাকারী। (মরুদ্ভ্যঃ) এই বায়ুবৎ বলবান এবং কর্মণ্য প্রজাবর্গের জন্য (পৃশ্নিঃ) সূর্য,আকাশ এবং পৃথিবী (সু-দুধা) গৌ এর সমান সুখময় পদার্থ প্রদানকারী, জলবর্বী ও অন্নদাত্রী এবং (সুদিনা) সূর্য উত্তম দিন প্রকটকারী । এই প্রকার "বায়ু" অর্থাৎ জ্ঞানের কামনাকারী শিষ্যগণ হলো "মরুত", এরা সমানভাবে ভ্রাতৃবৎ থাকবে। তাহাদের পিতা আচার্য এবং বিদ্বান বেদজ্ঞ, উত্তম জ্ঞান-রস প্রদানকারী হোন।

ভাষ্যকার : শ্রী পণ্ডিত জয়দেবজী শর্মা বিদ্যালঙ্কার, মীমাংসাতীর্থ।

২. একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করলে পৃথিবীর সকল মানুষকে হত্যা করা হবে কিভাবে? পৃথিবীর সকলেই কি নিরপরাধ, যে একের সাথে সব মিলিয়ে গুলিয়ে নিচ্ছেন? এরূপ কপোল কল্পিত মন ভোলানো বার্তালাপ বেদে নাই। তাছাড়া বেদে এমন হত্যার শিক্ষা দেওয়া হয়নি বরং বলা হয়েছে সকলে মিত্রবৎ থাকার জন্য এবং কারো প্রতি দ্বেষ না করার জন্য। যথা-

দৃতে॒ দৃꣳহ॑ মা মি॒ত্রস্য॑ মা॒ চক্ষু॑ষা॒ সর্বা॑ণি ভূ॒তানি॒ সমী॑ক্ষন্তাম্ ।

মি॒ত্রস্যা॒ऽহং চক্ষু॑ষা॒ সর্বা॑ণি ভূ॒তানি॒ সমী॑ক্ষে ।

মি॒ত্রস্য॒ চক্ষু॑ষা॒ সমী॑ক্ষামহে ॥ (যজুর্বেদ-৩৬/১৮)

পদার্থঃ- হে (দৃতে) অবিদ্যারূপী অন্ধকারের নিবারক জগদীশ্বর বা বিদ্বান্ ! যাহাতে (সর্বাণি) সকল (ভূতানি) প্রাণী (মিত্রস্য) মিত্রের (চক্ষুষা) দৃষ্টি দিয়া (মা) আমাকে (সম, ঈক্ষতাম্) সম্যক্ দেখুক, (অহম্) আমি (মিত্রস্য) মিত্রের (চক্ষুষা) দৃষ্টি দিয়া (সর্বাণি, ভূতানি) সকল প্রাণিদিগকে (সমীক্ষে) সম্যক্ দেখি, এইভাবে সব আমরা পরস্পর (মিত্রস্য) মিত্রের (চক্ষুষা) দৃষ্টি দিয়া (সমীক্ষামহে) দেখি, এই বিষয়ে আমাদেরকে (দৃংহ) দৃঢ় করুন ॥ 

ভাবার্থঃ- তাহারাই ধর্মাত্মা যাহারা স্বীয় আত্মার সদৃশ সম্পূর্ণ প্রাণিদিগকে মান্য করে, কাহারও প্রতি দ্বেষ না করে এবং মিত্রের সদৃশ সকলের সৎকার করে ॥

ভাষ্যকার : মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী

শুধু তাহাই নয় নিরপরাধ পশুকেও হত্যা করতে নিষেধ করা হয়েছে বেদে। তারমধ্যে গৌ হত্যার নিষেধ করা একটি মন্ত্র নিম্নরূপ-

 "প্র নু বোচং চিকিতুষে জনায়মা গামনা গামদিতিং বধিষ্ট" (ঋগ্বেদ-৮/১০১/১৫)

অনুবাদঃ- (পরমাত্মা উপদেশ দিতেছেন যে) জ্ঞানবান ব্যক্তির নিকট আমি বলিতেছি যে, নিরপরাধ পৃথিবী সদৃশ অহিংস গোজাতিকে হত্যা করিওনা।

৩.যে মানুষকে আল্লাহ্ তায়ালা মর্যাদা দিয়েছে সেই মানুষকে হত্যা করা যাবেনা বেদে এমন কিছু বেদে কেন বলতে যাবে? আল্লাহ নামই বেদে নাই, তাছাড়া আল্লাহ যে কাদের মর্যাদা দিয়েছে তা প্রকাশ্য সকলেই দেখতেছে আর বিবেকসম্পন্ন মানুষই তাদেত মর্যাদা দেয়না সেখানে বেদের নাম বলাই ভুল। 

৪.খুনোখুনি, হত্যা-হত্যি, মারা-মারি করা যাবেনা এমন কিছু বেদে বলা হয়েছে কিনা? হ্যাঁ অবশ্যই, উপরে যা দিয়েছি তা দ্বারাও তাহাই বুঝায়। তারপরেও আরো কিছু মন্ত্র দেওয়া হলো যাহাতে হত্যা তো দূর থাক ঘৃণা-ঈর্ষা আদি করতেও বারণ করা হয়েছে। যথা-


যেন॑ দে॒বা ন বি॒য়ন্তি॒ নো চ॑ বিদ্বি॒ষতে॑ মি॒থঃ। 

তৎকৃ॑ণ্মো॒ ব্রহ্ম॑ বো গৃ॒হে সঞ্॒জ্ঞানং॒ পুরু॑ষেভ্যঃ ॥(অথর্ববেদ-৩/৩০/৪)

সরলার্থঃসেই মহৎ জ্ঞান ও সচেতনতা, এবং সেই অবস্থা যা ঐশ্বরিক শান্তি ও ধার্মিকতায় সমৃদ্ধ, আমরা কি এমন গৃহ তৈরী করতে পারি না লোকদের জন্য যার গুণে মহৎ ব্যক্তিরা বিচ্ছিন্ন হয় না, পরস্পর বিরোধিতা করে না এবং পরস্পরকে ঘৃণা ও ঈর্ষাযুক্ত আচরণ করে না।

অনুবাদকঃ ড.তুলসীরাম শর্মা।

জ্যায়॑স্বন্তশ্চি॒ত্তিনো॒ মা বি যৌ॑ষ্ট সংরা॒ধয়॑ন্তঃ॒ সধু॑রা॒শ্চর॑ন্তঃ। 
অ॒ন্যো অ॒ন্যস্মৈ॑ ব॒ল্গু বদ॑ন্ত॒ এত॑ সধ্রী॒চীনা॑ন্বঃ॒ সংম॑নসস্কৃণোমি॥(অথর্ববেদ-৩/৩০/৫)

সরলার্থঃশ্রেষ্টত্বের দৌঁড়ে একে অন্যকে ছাড়িয়ে গেলেও আন্তরিকতার সহিত একতাবদ্ধ থাক, একই মানসিকতায়। কখনও বিচ্ছিন্ন হবে না, কখনও আলাদা হবে না, এগিয়ে যাও, লক্ষ্য অর্জন কর, সামাজিক দায়িত্ব একসাথে বহন কর, চাকার কেন্দ্রের অক্ষে অবস্থিত পদার্থের মতো চল।ভালবাসা এবং উৎসাহের সাথে একে অপরের আহ্বান এবং সহযোগিতা দিয়ে এগিয়ে যাও। আমি তোমাদের সকলকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদের সকলকে এক সম্প্রদায়, এক হৃদয়ে, এক মানসিকতায়,এক জাতি, একটি পরিবার হিসাবে যুক্ত করেছি।

অনুবাদকঃ ড.তুলসীরাম শর্মা।


স॑মা॒নী প্র॒পা স॒হ বো॑ঽন্নভা॒গঃ স॑মা॒নে যোক্ত্রে॑ স॒হ বো॑ যুনজ্মি।

 স॒ম্যঞ্চো॒ঽগ্নিং স॑পর্যতা॒রা নাভি॑মিবা॒ভিতঃ॑ ॥ (অথর্ববেদ-৩/৩০/৬)

অনুবাদঃ একসাথে পান কর এবং ভোজন কর,,এক সাধারণ ভালবাসার বন্ধনে আমি তোমাদের আবদ্ধ করেছি। রথের অক্ষের বিষয়ে পদার্থসমূহ যেমন একত্রিত,তেমনি তোমাদেরও ঐক্যবদ্ধভাবে ঈশ্বরের উপাসনা করা উচিত।

অনুবাদকঃ পন্ডিত দেবীচাঁদ

সং গ॑চ্ছধ্বং॒ সং ব॑দধ্বং॒ সং বো॒ মনাং॑সি জানতাম্ ।

দে॒বা ভা॒গং যথা॒ পূর্বে॑ সঞ্জানা॒না উ॒পাস॑তে ॥ (ঋগ্বেদ-১০/১৯১/২)

পদার্থঃ হে গৃহস্থাদি মনুষ্যগণ। আমি ঈশ্বর তোমাদিগকে আজ্ঞা দিতেছি যে, (যথা) যেমন (পূর্বে) প্রথম অধীত বিদ্যাযোগাভ্যাসের (সংজানানা) সম্যক্ জ্ঞাতা (দেবাঃ) বিদ্বানেরা মিলিত হইয়া (ভাগম্) সত্যাসত্যের নির্ণয় করিয়া অসত্যকে পরিত্যাগপূর্বক সত্যের (উপাসতে) উপাসনা করেন, তেমনই (সম্ জানতাম্) আত্মাদ্বারা ধর্মাধর্ম,

প্রিয়াপ্রিয়ের সম্যক্ জ্ঞাতা (বঃ) তোমাদের (মনাংসি) মন যাহাতে একে অন্যের অতি অবিরোধী হইয়া পূর্বোক্ত এক ধর্মে সম্মত হয়, সেইজন্য তোমরা সেই ধর্মকে (সংগচ্ছ বম্) সম্যক্‌ভাবে মিলিত হইয়া প্রাপ্ত হও যাহাতে তোমাদের সম্মতি এক হয় এবং বিরুদ্ধবাদ অধর্মকে ত্যাগ করিয়া (সংবদ বম্) প্রীতির সহিত সম্যক্ কথোপকথন ও প্রশ্নোত্তর করিয়া একে অন্যের উন্নতি করিতে থাকো।।

ভাষ্যকার : মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী।

অন্য ভাষ্যঃ


পদার্থঃ(সংগচ্ছধ্বম) তোমরা সকলে এক সঙ্গে মিলিয়া চল (সংবদধ্বম্) একসঙ্গে মিলিয়া আলোচনা কর (বঃ মনাংসি) তোমাদের মন (সংজানতাম্) উত্তম সংস্কার যুক্ত হউক (পূর্ব্বে) পূর্ব্ব কালীন (সং জানানা দেবাঃ) মহাজ্ঞানী পুরুষেরা (যথা) যেমন (ভাগম্) কৰ্ত্তব্য কর্ম্ম (উপ-আসতে) করিয়াছেন। 

সরলার্থঃহে মনুষ্য! তোমরা একসঙ্গে চল, একসঙ্গে মিলিয়া আলোচনা কর, তোমাদের মন উত্তম সংস্কার যুক্ত হউক। পূর্ব্বকালীন জ্ঞানী পুরুষেরা যেরূপ কর্ত্তব্য কর্ম্ম সম্পাদন করিয়াছেন তোমরাও সেই রূপ কর !

ভাষ্যকার : শ্রী বৈদ্যনাথ শাস্ত্রী


স॒মা॒নো মন্ত্র॒: সমি॑তিঃ সমা॒নী স॑মা॒নং মন॑: স॒হ চি॒ত্তমে॑ষাম্ ।

 স॒মা॒নং মন্ত্র॑ম॒ভি ম॑ন্ত্রয়ে বঃ সমা॒নেন॑ বো হ॒বিষা॑ জুহোমি ॥ (ঋগ্বেদ-১০/১৯১/৩)

পদার্থঃ(মন্ত্রঃ সমানঃ)তোমাদের বিচারশীলতা সমান হোক;(সমিতিঃ সমানী)কার্যপ্রকৃতি সমান হোক;(এষাম্ -সমানম্ মনঃ) তোমাদের মন সমান হোক;(চিত্তম্ সহ) চিত্তও সমান হোক;(বঃ সমাবম্ মন্ত্রম্)তোমাদের মন্ত্র সমান হোক;(অভিমন্ত্রয়ে) সম্পাদিত করিয়াছি,সৃষ্টি করিয়াছি;(বঃ) তোমরা (সমানেন হবিষা) সমানভাবে প্রার্থনা,উপসনা এবং কর্মকে গ্রহণ কর।

ভাবার্থঃমনুষ্যের সমান বিচারশীলতা,সমান কার্যপদ্ধতি ,মন এবং চিত্ত সমান হওয়া উচিত।আবার প্রার্থনা,উপসনাও সমান হওয়া উচিত।

ভাষ্যকার : ব্রহ্মমুনি পরিব্রাজক

স॒মা॒নী ব॒ আকূ॑তিঃ সমা॒না হৃদ॑য়ানি বঃ । 

স॒মা॒নম॑স্তু বো॒ মনো॒ যথা॑ ব॒: সুস॒হাস॑তি॥ (ঋগ্বেদ-১০/১৯১/৪)

পদার্থঃ(বঃ আকুতি) তোমাদের লক্ষ্য (সমানী) সমান হউক (বঃ হৃদয়ানি) তোমাদের হৃদয় (সমানঃ) হউক (বঃ মনঃ) তোমাদের মন (সমানং অস্তু) সমান হউক (যথা) যাহাতে (বঃ) তোমাদের (সহ-সু-অসতি) শক্তি উত্তম হয়।

সরলার্থঃতোমাদের সকলের লক্ষ্য সমান হউক, তোমাদের হৃদয় সমান হউক তোমাদের মন সমান হউক। এই৷ ভাবে তোমাদের সকলের শক্তি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হউক।

ভাষ্যকার : শ্রী বৈদ্যনাথ শাস্ত্রী।

মাতা সবিতা জোশীকৃত–

ভাবার্থঃ প্রত্যেক ব্যক্তির অনুভূতি একই হওয়া উচিত। হৃদয়ের ধারণাগত বিষয় অভিন্ন হওয়া উচিত। মন সমান হওয়া উচিত। পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য এটি অপরিহার্য। মানুষের একে অপরকে সহযোগিতা করা উচিত, এটাই মানবতা।

এমন আরো অনেক মন্ত্র দেখানো যাবে! কিন্তু যাদের বিদ্যার চেয়ে অবিদ্যা বেশী তাদের সমস্যার শেষ নেই। যেমনঃ-বেদে আল্লাহ্ এর নাম,নবী মোহাম্মদের নাম,বেদে অমানবিকতা ইত্যাদি খুঁজে পায় যা আদৌতে বেদে নাই। তারা মুখস্ত বিদ্যাকে সঙ্গী করে সেটা কাজে লাগাতে চায়! বেদ মুখস্ত করার বিষয় নয়,এটি হল গুরুমুখী শিক্ষা!গুরু হইতে শিষ্য সঠিক জ্ঞানটুকু অর্জন করে নিজের পরিবার,সমাজ এবং রাষ্ট্রের উন্নতি সাধন করবেন।

ম্মেচ্ছ ছেলেটি তারপর বেদের অনেকগুলো রেফারেন্স উদ্ধৃত করে বেদে 'অমানবিকতা' রয়েছে বলে অপপ্রচার করেছে। তারমধ্যে কিছু মন্ত্রের রেফারেন্স যাচাই করে দেখে আমাদের অনুমান হচ্ছে যে, তার ইসলামিক জ্ঞান থাক বা না থাক, কিন্তু সাধারণ জ্ঞান নাই। সে ঋষি দয়ানন্দজীর নাম বলে যে রেফারেন্সগুলো দিয়েছে তা হলো- যজুর্বেদ-১৭/৬৪,৬৩,৪৪,৪৫,৩৮,৩৯ ইত্যাদি।আমরা তার বলা কথাগুলো শুনে আসি-



সামাজিকভাবে,রাষ্ট্রীয়ভাবে মনুষ্যের যা করণীয় বেদে পরমপিতা পরমেশ্বর সেই জ্ঞান প্রদান করেছেন।কারো বিরোধীতায় সেই জ্ঞান এতটুকুও ক্ষুন্ন হবে না।অপপ্রচার কারীদের দাবী বেদে অমানবিকতার কথা বলা হয়েছে।আসুন সবাই জানার চেষ্টা করি সেই মন্ত্রগুলোতে কি বলা হয়েছে।দাবী অনুসারে বিচার করতে গেলে প্রথমে একটি মন্ত্র জানা প্রয়োজন।সেই মন্ত্রটি হলঃ-




ঋষি: আশুঃ শিশান ইত্যস্যাপ্রতিরথ ॥ দেবতা: ইন্দ্রো ॥ ছন্দ: আর্ষী ত্রিষ্টুপ্ ॥ স্বরঃ-ধৈবতঃ॥

আ॒শুঃ শিশা॑নো বৃষ॒ভো ন ভী॒মো ঘ॑নাঘ॒নঃ ক্ষোভ॑ণশ্চর্ষণী॒নাম্ । 

সং॒ক্রন্দ॑নোऽনিমি॒ষऽএ॑কবী॒রঃ শ॒তꣳ সেনা॑ऽঅজয়ৎ সা॒কমিন্দ্রঃ॑ ॥ (যজুর্বেদ-১৭/৩৩)

পদার্থঃ–হে বিদ্বান্ মনুষ্যগণ! তোমরা যে (চর্ষণীনাম্) সমস্ত মনুষ্যগণ বা তাহাদের সম্পর্কিত সেনা মধ্যে (আশুঃ) শীঘ্রকারী (শিশানঃ) পদার্থসমূহকে সূক্ষ্মকারী (বৃষভঃ) বলবান্ বৃষের (ন) সমান (ভীমঃ) ভয়ংকর (ঘনাঘনঃ) অত্যন্ত আবশ্যকতা সহ শত্রুদিগের নাশকারী (ক্ষোভনঃ) তাহাদিগকে কম্পনকারী (সংক্রন্দনঃ) উত্তম প্রকার শত্রুদিগকে রোদনকারী এবং (অনিমিষঃ) রাত্রি-দিন প্রযত্নকারী (একবীরঃ) একাবীর (ইন্দ্রঃ) শত্রুদিগকে বিদীর্ণকারী সেনার অধিপতি পুরুষ আমাদিগের (সাকম্) সহ (শতম্) বহু (সেনাঃ) সেই সব সেনাকে যদ্দ্বারা শত্রুকে বন্ধন করে, (অজয়ৎ) জিতিয়া লয়–তাহাকেই সেনাধীশ কর ॥

ভাবার্থঃ–মনুষ্যদিগের উচিত যে, যিনি ধনুর্বেদ এবং ঋগ্বেদাদি শাস্ত্রজ্ঞাতা, নির্ভয়, সর্বদিকে কুশল, অতি বলবান্, ধার্মিক, নিজ প্রভুর রাজ্যে সম্প্রীতিকারী, জিতেন্দ্রিয়, শত্রুদিগের বিজয়ী তথা স্বীয় সেনাকে শেখাইতে এবং যুদ্ধ করাইতে কুশল বীর পুরুষ হয় তাহাকে সেনাপতির অধিকারে নিযুক্ত করিবে ॥

ভাষ্যকার : মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী

ব্যাখ্যাঃউপরোক্ত মন্ত্রে "ন ভীমঃ" শব্দগুলো এসেছে।নিরুক্ত(১/২০) অনুসারে "ন" শব্দ দ্বারা উপমা বোঝানো হয়েছে।আবার,ইন্দ্র হল এই মন্ত্রের দেবতা।শতপথ ব্রাহ্মণ(২/১/২/১১) অনুসারে "যজমান ইন্দ্র স্বরুপ" অর্থাৎ "যজমানই হল ইন্দ্র"!তাহলে মন্ত্রতে বোঝা যাচ্ছে,


১ঃএই মন্ত্রটি রুপক অর্থ বহন করছে।

২ঃযজমানকে উদ্দেশ্য করে মন্ত্রটি এবং পরেরগুলোও।

এই মন্ত্রে আরও কিছু বিষয় উপলদ্ধ যারা দেশের শত্রু,জনগণের শত্রু তাদেরকে সাজা দেওয়া সেনাপ্রধানের কাজ।সেই অর্থেও এই মন্ত্রটি ব্যবহৃত হতে পারে।কারণ,মহর্ষি দয়ানন্দ মন্ত্রের বিষয় যা বলেছেন তা হলঃ

অথ সেনাপতিকৃত্যমুপদিশ্যতে ॥

অর্থাৎ এখন সেনাপতির কৃত্যের উপদেশ পরবর্ত্তী মন্ত্রে করা হইয়াছে।

ন্যায় বিচারের জন্য সেনাপতির কর্তব্যও এই মন্ত্র এবং পরবর্তী মন্ত্রসমূহে উল্লেখ করা হয়েছে।

এবার পর্যায়ক্রমে মন্ত্রগুলো দেখা যাক!


উ॒দ্গ্রা॒ভম্ চ॑ নিগ্রা॒ভম্ চ॒ ব্রহ্ম॑ দে॒বাঽঅ॑বীবৃধন্। 

অধা॑ স॒পত্না॑নিন্দ্রা॒গ্নী মে॑ বিষূ॒চীনা॒ন্ ব্যস্যতা॥ (যজুর্বেদ-১৭/৬৪)

পদার্থঃ–(দেবাঃ) বিদ্বান্গণ (উদগ্রাভম্) অত্যন্ত উৎসাহপূর্বক গ্রহণ (চ) এবং (নিগ্রাভং, চ) ত্যাগও করিয়া (ব্রহ্ম) ধনকে (অবীবৃধন্) বৃদ্ধি করাইবেন, (অধ) ইহার পরে (ইন্দ্রাগ্নী) বিদ্যুৎ ও অগ্নির সমান দুই সেনাপতি (মে) আমার (বিষূচীনান্) বিরোধভাব প্রদর্শনকারী (সপত্নান্) শত্রুদিগকে (ব্যস্যতাম্) উত্তম প্রকার আছাড় মারিবেন ॥ 

ভাবার্থঃ–যে সব মনুষ্য সজ্জনদিগের সৎকার এবং দুষ্টদিগকে পিটিয়া মারিয়া ধনকে বৃদ্ধি করাইয়া নিষ্কণ্টক রাজ্যের সম্প্রদান করে তাহারাই প্রশংসিত হয় । যে রাজা রাজ্যে নিবাসকারী সজ্জনদিগের সৎকার এবং দুষ্টদিগকে নিরাদর করিয়া স্বয়ং তথা প্রজার ঐশ্বর্য্যকে বৃদ্ধি করে, তাহারই সভ্য ও সেনার রক্ষাকারী ব্যক্তিগণ শত্রুদিগের নাশ করিতে পারে ॥ 

ভাষ্যকার : মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী



বাজস্যেত্যস্য বিধৃতির্ঋষিঃ ॥ ইন্দ্রো দেবতা ॥ বিরাডার্ষ্যনুষ্টুপ্ ছন্দঃ ॥ গান্ধারঃ স্বরঃ ॥

বাজ॑স্য মা প্রস॒বऽউ॑দ্গ্রা॒ভেণোদ॑গ্রভীৎ ।

অধা॑ স॒পত্না॒নিন্দ্রো॑ মে নিগ্রা॒ভেণাধ॑রাঁ২ऽঅকঃ ॥ (যজুর্বেদ-১৭/৬৩)

বিষয়ঃপুনঃ সেই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ॥

পদার্থঃ–হে মনুষ্যগণ! যেমন (ইন্দ্রঃ) পালনকারী (বাজস্য) বিশেষ জ্ঞানের (প্রসবঃ) উৎপন্নকারী ঈশ্বর (মা) আমাকে (উদ্গ্রাভেণ) উত্তম গ্রহণ করিবার সাধন দ্বারা (উদ্, অগ্রভীৎ) গ্রহণ করেন সেইরূপ যিনি (অধ) ইহার পিছনে তদনুসার পালনকারী এবং বিশেষ জ্ঞান শিক্ষাকারী পুরুষ (মে) আমার (সপত্নান্) শত্রুদিগকে (নিগ্রাভেন) পরাজয় দ্বারা (অধরান্) অধঃপতিত করিতে (অকঃ) থাকেন, তাহাকে তোমরাও সেনাপতি কর ॥

ভাবার্থঃ–এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে । যেমন ঈশ্বর পালন করেন তদ্রূপ যে মনুষ্য পালনের জন্য ধার্মিক মনুষ্যদিগকে উত্তম প্রকারে গ্রহণ করেন এবং দণ্ড দেওয়ার জন্য দুষ্টদিগের নিগ্রহ অর্থাৎ মাথা নিচু করিয়া দেন তিনিই রাজ্য করিতে পারেন ॥ 

ভাষ্যকার : মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী


ঋষি: অমীষামিত্যস্যাপ্রতিরথ ॥  দেবতা: ইন্দ্রো ॥ ছন্দ: বিরাডার্ষী ত্রিষ্টুপ্ ॥ স্বর: ধৈবতঃ ॥

অ॒মীষাং॑ চি॒ত্তং প্র॑তিলো॒ভয়॑ন্তী গৃহা॒ণাঙ্গা॑ন্যপ্বে॒ পরে॑হি ।

অ॒ভি প্রেহি॒ নির্দ॑হ হৃ॒ৎসু শোকৈ॑র॒ন্ধেনা॒মিত্রা॒স্তম॑সা সচন্তাম্ ॥ 

পদার্থঃ–হে (অপ্বে) শত্রুদিগের প্রাণগুলিকে নাশকারিণী রাণী ক্ষত্রিয়া বীর স্ত্রী! (অমীষাম্) সেই সব সেনাদিগের (চিত্তম্) চিত্তকে (প্রতিলোভয়ন্তী) প্রত্যক্ষতঃ লোভ প্রদানকারিণী যে নিজস্ব সেনা তাহার (অঙ্গানি) অঙ্গসকলকে তুমি (গৃহাণ) গ্রহণ করিয়া অধর্ম্ম হইতে (পরেহি) দূরে থাক, নিজের সেনাকে (অভি, প্রেহি) নিজ অভিপ্রায় দর্শন করাও এবং শত্রুদিগকে (নির্দহ) নিরন্তর জ্বালাও যাহাতে এই সব (অমিত্রাঃ) শত্রুগণ (হৃৎসু) নিজ নিজ হৃদয়ে (শোকৈঃ) শোক দ্বারা (অন্ধেন) আচ্ছাদিত (তমসা) রাত্রির অন্ধকার সহ (সচন্তাম্) সংযুক্ত থাকে ॥ 

ভাবার্থঃ–সভাপতি আদির কর্ত্তব্য যে, যেমন অতি প্রশংসিত হৃষ্ট-পুষ্ট অঙ্গ-উপাঙ্গাদিযুক্ত শূরবীর পুরুষদিগের সেনাকে স্বীকার করিবে সেইরূপ শূরবীর স্ত্রীদিগের সেনাও স্বীকার করিবে এবং যে স্ত্রী সেনা মধ্যে অব্যভিচারিণী স্ত্রী থাকিবে সেই সেনা দ্বারা শত্রুদিগকে বশে স্থাপন করিবে ॥

যজুর্বেদ(১৭/৪৪)ভাষ্যঃমহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী।


ঋষি: অবসৃষ্টেত্যস্যাপ্রতিরথ ॥ দেবতা: ইষুর্দেবতা ॥ ছন্দ: আর্ষ্যনুষ্টুপ্ ॥স্বর: গান্ধারঃ ॥

অব॑সৃষ্টা॒ পরা॑ পত॒ শর॑ব্যে॒ ব্রহ্ম॑সꣳশিতে ।

গচ্ছা॒মিত্রা॒ন্ প্র প॑দ্যস্ব॒ মামীষাং॒ কঞ্চ॒নোচ্ছি॑ষঃ ॥(যজুর্বেদ-১৭/৪৫)

পদার্থঃ–হে (শরব্যে) বাণবিদ্যায় কুশল (ব্রহ্মসংশিতে) বেদবেত্তা বিদ্বান্ হইতে প্রশংসা এবং শিক্ষা প্রাপ্ত সেনাধিপতির স্ত্রী! তুমি (অবসৃষ্টা) প্রেরণা প্রাপ্ত (পরা, পত) দূরে গমন করিয়া (অমিত্রান্) শত্রুদিগকে (গচ্ছ) প্রাপ্ত হও এবং তাহাদের বধ করিয়া বিজয় (প্র, পদ্যস্ব) লাভ কর । (অমীষাম্) সেই সব দূর দেশে স্থিত শত্রুদিগের মধ্যে না বধ করিয়া (কং, চন) কাহাকেও (মা) (উচ্ছিষ্টঃ) ছাড়িও না ॥ 

ভাবার্থঃ–সভাপতি আদির উচিত যে, যেমন যুদ্ধবিদ্যা দ্বারা পুরুষ শিক্ষা গ্রহণ করিবে সেই রূপ নারীগণও শিক্ষা করুক । যেমন বীরপুরুষ যুদ্ধ করিবে সেইরূপ নারীগণও করিবে । যাহারা যুদ্ধে নিহত হয়, তদ্ব্যতীত অবশিষ্ট যে সব আহতগণ থাকিবে তাহাদিগকে কারাগারে নিক্ষেপ কর ॥

ভাষ্যকার : মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী।





ঋষি: অপ্রতিরথ॥ দেবতা: ইন্দ্রো ॥ ছন্দ: ভুরিগার্ষী ত্রিষ্টুপ্ ॥স্বর: ধৈবতঃ ॥

গো॒ত্র॒ভিদং॑ গো॒বিদম্ বজ্র॑বাহুং॒ জয়॑ন্ত॒মজ্ম॑ প্রমৃ॒ণন্ত॒মোজ॑সা। 

ই॒মꣳ স॑জাতা॒ঽঅনু॑ বীরয়ধ্ব॒মিন্দ্র॑ꣳ সখায়ো॒ঽঅনু॒ সꣳর॑ভধ্বম্॥ (যজুর্বেদ-১৭/৩৮)

পদার্থঃহে (সজাতাঃ) একদেশে উৎপন্ন (সখায়ঃ) পরস্পর সাহায্যকারী মিত্রগণ! তোমরা (ওজসা) স্বীয় শরীর ও বুদ্ধি বল বা সেনাগণ দ্বারা (গোত্রভিদম্) শত্রুদিগের গোত্র অর্থাৎ সমুদায়কে ছিন্ন ভিন্ন কর, তাহাদের শিকড় কাট (গোবিদং) শত্রুদিগের ভূমি গ্রহণ করিয়া লও (বজ্রবাহুম্) নিজ ভুজা মধ্যে শস্ত্রগুলি ধারণ কর (প্রমৃণন্তম্) উত্তম প্রকারে শত্রুদিগকে বধ কর (অজ্ম) যদ্দ্বারা বা যন্মধ্যে শত্রুগণকে আছাড় মার সেই সংগ্রামে (জয়ন্তম্) বৈরীদেরকে জিতিয়া লও এবং (ইমম্, ইন্দ্রম্) তাহাদেরকে বিদীর্ণ কর এই সেনাপতিকে (অনু, বীরয়ধ্বম্) প্রোৎসাহিত কর এবং (অনু, সংরভধ্বম্) উত্তম প্রকারে যুদ্ধ আরম্ভ কর ॥ 

 ভাবার্থঃ–সেনাপতি আদি তথা সেনার ভৃত্য পরম্পর মিত্র হইয়া একে অপরের অনুমোদন করিয়া যুদ্ধের আরম্ভ ও বিজয় করিয়া শত্রুদিগের রাজ্য প্রাপ্ত হইয়া এবং ন্যায়পূর্বক প্রজাকে পালন করিয়া নিরন্তর সুখী হউক ॥ 

ভাষ্যকার : মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী

ব্যাখ্যাঃঅজম্ সংগ্রামনামানি।(নিঘন্টু ২/১৭)।এটি দ্বারা বোঝা যায় যে,"অজম্" হল সংগ্রামের নাম।"জয়ন্তমজম্" এটি দ্বারা বোঝানো হচ্ছে সংগ্রামে জয় করার উপায়।সেনাপতির উদ্দেশ্যে এই মন্ত্র ব্যবহৃত হয়।

অমরেশ্বর ঠাকুরের নিরুক্ত(১/৩/৫/৬) অনুসারে "ইন্দ্রকে শতসেনা জয়কারী" বলা হয়েছে।

অ॒ভি গো॒ত্রাণি॒ সহ॑সা॒ গাহ॑মানোঽদ॒য়ো বী॒রঃ শ॒তম॑ন্যু॒রিন্দ্রঃ॑। 

দু॒শ্চ্য॒ব॒নঃ পৃ॑তনা॒ষাড॑য়ু॒ধ্যোঽঅ॒স্মাক॒ꣳ সেনা॑ অবতু॒ প্র যু॒ৎসু॥৩৯॥

বিষয়ঃপুনঃ সেই বিষয়কে পরবর্ত্তী মন্ত্রে বলা হইয়াছে ।

পদার্থঃ–হে বিদ্বানগণ! (য়ুৎসু) যাহার দ্বারা বহু পদার্থের মিশ্রণ অমিশ্রণ করে সেই সব যুদ্ধে (সহসা) বল দ্বারা (গোত্রাণি) শত্রুদিগের কুলকে (প্র, গাহমানঃ) উত্তম প্রযত্ন পূর্বক আলোড়িত করিয়া (অদয়ঃ) নির্দয়, (শতমন্যুঃ) যাহার শত প্রকার ক্রোধ বিদ্যমান (দুশ্চ্যবনঃ) যে দুঃখ দ্বারা শত্রুদেরকে পাতিত করিবার যোগ্য (পৃতনাঘাট্) শত্রুর সেনাকে সহ্য করে (অয়ুধ্যঃ) এবং যে শত্রুদের সহিত যুদ্ধ করিবার যোগ্য নহে (বীরঃ) তথা শত্রুদিগকে বিদীর্ণ করে সে (অস্মাকম্) আমাদের (সেনাঃ) সৈন্যদিগকে (অভি, অবতু) সব দিক দিয়া পালন করিবে এবং (ইন্দ্রঃ) সেনাধিপতি হয়–এই রকম আজ্ঞা তুমি প্রদান কর ॥ ৩ঌ ॥

ভাবার্থঃ–যে ধার্মিকদিগের মধ্যে করুণা সঞ্চারকারী এবং দুষ্টদিগের মধ্যে দয়ারহিত সব দিক দিয়া সকলের রক্ষাকারী মনুষ্য হয়, সেই সেনা পালনে অধিকারী হওয়ার যোগ্য ॥ ৩ঌ ॥

যজুর্বেদ(১৭/৩৯),ভাষ্যঃমহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী।

🖋️অরূপ আর্য

©️আর্য প্রতিনিধি সভা বাংলাদেশ 

Post a Comment

0Comments

Please Select Embedded Mode To show the Comment System.*