বেদে পশু বলি নিয়ে পৌরাণিকদের আক্ষেপ নিবারণ

ရိုရို
1

বেদে পশু বলি নিয়ে পৌরাণিকদের আক্ষেপ নিবারণ


নমস্তে,

বেদে পশুবলি আছে কি না এই বিতর্ক অনেক পুরনো।এটার স্বপক্ষে যেমন প্রমাণ প্রস্তুত করা যায় তেমন এর বিপক্ষেও অনেক প্রমাণ প্রস্তুত করা যায়।কেউ কেউ সায়ণ ভাষ্যের প্রমাণ তুলে ধরে  বেদে পশুবলির কথাকে সর্বোচ্চ মান্যতা দিয়ে থাকেন।তেমনই বিগত কিছুদিন আগে শ্রদ্ধেয় একজন দাদা বেদে পশুবলির স্বপক্ষে কিছু প্রমাণ তুলে ধরেছেন এবং বেদে পশুবলিকে মান্যতা দিয়েছেন।উনি যে প্রমাণগুলো তুলে ধরেছেন সেগুলো কতটুকু যুক্তিযুক্ত এবং সত্য তা এই লেখায় তুলে ধরা হবে!

লেখাটি সম্পূর্ণ পড়ার অনুরোধ রইল।

একজন পৌরাণিক ব্যক্তি ইতিমধ্যে দাবী করেছেন বেদে পশুবলির কথা উল্লেখ আছে,তিনি কিছু প্রমাণও প্রস্তুত করেছেন।তার প্রমাণগুলো কতটুকু সত্য তা বিচার করা যাক।

দাবী—

★ঋগ্বেদ(১/১৬২ এবং ১৬৩) সূক্তে পশুবলির কথা উল্লেখ আছে★

👇





খণ্ডনঃ

সায়ণ ভাষ্যের বাংলা অনুবাদে পাওয়া যায়—

১। যেহেতু আমরা যজ্ঞে দেবজাত দ্রুতগতি অশ্বের বীরকর্ম কীর্তন করিতেছি; অতএব মিত্র, বরুণ, অ্যমা, আয়ু, ইন্দ্র, ঋভুক্ষা এবং মরুৎগণ যেন আমাদিগের নিন্দা না করেন (১)।

২। সুন্দর স্বর্ণাভরণে বিভূষিত অশ্বের সম্মুখে (ঋত্বিকগণ) উৎসর্গার্থ ছাগ ধরিয়া লইয়া যাইতেছেন। বিবিধ বর্ণ ছাগ শব্দ করতঃ তদভিমুখে গমন করিতেছে, উহা ইন্দ্র ও পুষার প্রিয় অন্ন হউক।

৩। সকল দেবতার উপযুক্ত ছাগ পুষারই ভাগে পড়ে, উহাকে দ্রুতগতি অশ্বের সহিত সম্মুখে আনা হইতেছে। অতএব ত্বষ্টা দেবতাগণের সুভোজনের নিমিত্ত অশ্বের সহিত ঐ অজ হইতে সুখাদ্য পুরোডাশ প্রস্তুত করুন।

৪। যখন ঋত্বিকগণ দেবতাগণের লভ্য হবির্যোগ্য অশ্বকে প্রতি ঋতুতে তিনবার অগ্নির নিকট লইয়া যায়, সেই সময় পুষার প্রথমভাগের ছাগ দেবতা- গণকে যজ্ঞের কথা প্রচার করিয়া অগ্রে গমন করে।

৫। হোতা, অধ্বর্য্য, আবয়া, অগ্নিমিন্ধ, গ্রাবগ্রাভ, শংস্তা, ও মেধাবী ব্রহ্মা ইঁহারা সকলে (২) প্রসিদ্ধ, অলঙ্কৃত, সুন্দর যজ্ঞদ্বারা নদী সকল পরিপূর্ণ করুন।

৬। যাহারা যুপবৃক্ষ ছেদন করে, যাহারা যুপবৃক্ষ বহন করে, যাহারা অশ্বযুপের জন্য চযাল প্রস্তুত করে (৩), যাহারা অশ্বের জন্য পাকপাত্র সংগ্রহ করে, আমাদিগের সংকল্পই যেন তাহাদেরও সংকল্প হয়।

৭। আমার মনোরথ আপনিই সিদ্ধ হউক, মনোহর পৃষ্ঠবিশিষ্ট অশ্ব দেবতা- গণের আশা পূরণার্থ আগমন করুক। দেবতাগণের পুষ্টির জন্য আমরা উহাকে উত্তমরূপে বন্ধন করিব, মেধাবী ঋত্বিক্সণ আনন্দিত হউন।

৮। যে রজ্জুদ্বারা অশ্বের গ্রীবা বন্ধ হয়, যাহার দ্বারা উহার পদ বন্ধ হয়, যে রজ্জু উহার মস্তকে বদ্ধ থাকে, সেই রজ্জু সকল, এবং উহার মুখে যে ঘাস নিক্ষেপ করা হয়, সে সমস্তই দেবগণের নিকট গমন করুক।

৯। অশ্বের অপক মাংসের যে অংশ মক্ষিকা ভক্ষণ করে, ছেদন কালে বা পরিষ্কার করিবার সময় ছেদন ও পরিষ্কার সাধন অস্ত্রে যাহা লিপ্ত হয়, ছেদকের হস্তদ্বয়ে এবং নখে যাহা লিপ্ত থাকে, সে সমস্তই দেবগণের নিকট গমন করুক।

দ্রষ্টব্যঃঋগ্বেদ(১/১৬২/১-৯),অনুবাদকঃরমেশ চন্দ্র দত্ত।



★পয়েন্ট ১★

সায়ণাচার্য্যের ঋগ্বেদ(১/১৬২/৩) মন্ত্রের মূল সংস্কৃত ভাষ্যে "অশ্বেন বাজিনা" এর অর্থ পাওয়া যায় "শীঘ্র ব্যাপকেনাশ্বেন সহ"! যেখানে " অশ্ব" অর্থ ব্যাপক।কিন্তু "ঘোড়া" কিভাবে ব্যাপক হয় তা স্পষ্ট করেন নি।তাহলে এই মন্ত্রের অনুবাদে "অশ্ব" অর্থ ঘোড়া গ্রহণ করা কতটুকু যুক্তিযুক্ত?

★পয়েন্ট(২)★

এর পরেরই সূক্ত অর্থাৎ ১৬৩ নং সূক্তের ৪নং মন্ত্রের অনুবাদে (৩)নং টীকাতে  রমেশ চন্দ্র দত্ত তুলে ধরেছেন "মহিধর বলেন এখানে অশ্ব সূর্য্যরুপী তিন লোকে উত্তাপ প্রদান করেন"। এখন প্রশ্ন—সেই অশ্ব কিভাবে সূর্য্যরুপী লোকে উত্তাপ প্রদান করবেন যাকে ১৬২ নং সূক্তে যজ্ঞে বলি দেওয়া হয়েছে?তাহলে মহিধর কি ভুল ছিলেন?



ঋগ্বেদ(১/১৬৩) সূক্তের কিছু মন্ত্র দেখা যাক—

২। যম অশ্ব প্রদান করিয়াছিলেন, ত্রিত তাহা রথে যোজিত করিলেন, ইন্দ্র প্রথম উহাতে আরোহণ করিলেন, এবং গন্ধর্ব্ব বলগা ধারণ করিলেন। বসুগণ সূর্য্য হইতে অশ্বকে নির্মাণ করিলেন (১)।

৩। হে অশ্ব! তুমি যম,তুমি আদিত্য, তুমি গোপনীয় ব্রতধারী ত্রিত, তুমি সোমের সহিত মিলিত।  (পুরাবিৎগণ) বলেন, যে দ্যুলোকে তোমার তিনটি বন্ধন স্থান আছে (২)। 

৪। হে অশ্ব! দ্যুলোকে তোমার তিনটি বন্ধন আছে, জলমধ্যে (অর্থাৎ পৃথিবীতে) তোমার তিনটি বন্ধন আছে, এবং অন্তরীক্ষে তোমার তিনটি বন্ধন আছে (৩)। তুমিই বরুণ, পুরাবিদেরা যে সকল স্থানে তোমার পরম জন্মের নির্দেশ করিয়াছেন, তুমি আমাদিগকে তাহা বলিতেছ।

৫। হে অশ্ব! আমি দেখিয়াছি, এই সকল স্থান তোমার অঙ্গশোধক। তুমি যখন যজ্ঞাংশ ভোজন কর তোমার পদচিহ্ন এই স্থানে পড়ে, তোমার যে ফলপ্রদ বঙ্গা সত্যভূত যজ্ঞ রক্ষা করে, তাহাও এই স্থানে দেখিয়াছি।

৬! হে অশ্ব! আমি মনেরদ্বারা দূর হইতে তোমার শরীর চিনিতে পারিয়াছি, তুমি নিম্ন হইতে অন্তরীক্ষ পথে সূর্য্যে উঠিতেছ। আমি দেখিতেছি, তোমার মস্তক ধূলি রহিত সুখকর পথে দ্রুতবেগে ক্রমেই উপরে উঠিতেছে।

৭। আমি দেখিতেছি, তোমার উৎকৃষ্ট রূপ পৃথিবীস্থানে চতুর্দ্দিকে অন্নার্থ আগমন করিতেছে। হে অশ্ব! মনুষ্য যখন ভোগ লইয়া তোমার নিকটে গমন করে, তখন তুমি গ্রাসযোগ্য তৃণাদি ভক্ষণ কর।

দ্রষ্টব্যঃঋগ্বেদ(১/১৬৩/২-৭),অনুবাদঃরমেশচন্দ্র দত্ত।



★পয়েন্ট(৩)★

ঋগ্বেদ(১/১৬৩) সূক্তের মন্ত্রগুলো পড়লে জানা যায় বসুগণ সূর্য্য হইতে অশ্বকে নির্মাণ করেন এবং সেই অশ্বকেই যম,আদিত্য,বরুণ নামে তুলে ধরা হয়েছে।আর সেই অশ্বকেই ১৬২ নং সূক্তে বলি দেওয়া হয়েছে।

আবার অন্য এক পৌরাণিক বিদ্বান দূর্গাদাস লাহিড়ীর যজুর্বেদ অনুবাদে পাওয়া যায়—

১৯। হে অশ্ব! তুমি মাতা পৃথিবীর সম্পর্কে এত সমর্থ হয়েছ এবং পিতা দ্যুলোকের সাথে সম্পর্কের দ্বারাই এত প্রভূতাবান্ হয়েছ। তুমি অশ্ব-হয়-অত্য-ময়-অর্বা সপ্তি-বাজী-বৃষা-নৃমনা এইরকম নামে শংসনীয় হয়েছে; তুমি যজমানে বিলগ্ন মনঃসম্পন্ন এবং যযু, শিশু নামশালী হয়েছ। তুমি দেবমার্গকে প্রাপ্ত হও। হে আশাপাল দেবগণ(রক্ষক ক্ষত্রিয় কুমারগণ)! দেবগণের নিমিত্ত জলের দ্বারা পবিত্রীকৃত এই অশ্বকে সর্বথা রক্ষা করো। হে অশ্ব! এইস্থান তোমার রমণস্থলী। তুমি এইস্থানে রমণ করো।এইস্থান তোমার স্থিতিস্থলী। তুমি এইস্থানে অবস্থান করো। এই স্থলে তুমি সন্তোষ প্রাপ্ত হও।

দ্রষ্টব্যঃশুক্ল যজুর্বেদ(২২/১৯),অনুবাদঃদূর্গাদাস লাহিড়ী।



আরো দেখুন—

৫। (তড়াগ ইত্যাদির জলে অশ্বকে পোষণ করণীয়)-হে অশ্ব! প্রজাপতির নিমিত্ত প্রিয় তোমাকে আমি প্রেক্ষিত করছি। জলে উৎসক্তি করে তোমাকে পবিত্র করছি। বায়ুর নিমিত্ত প্রিয় তোমাকে প্রেক্ষিত করছি। ইন্দ্র ও অগ্নির নিমিত্ত প্রিয় তোমাকে প্রেক্ষিত করছি। বিশ্বদেবগণের নিমিত্ত প্রিয় তোমাকে প্রেক্ষিত করছি। সকল দেবতার নিমিত্ত প্রিয় তোমাকে প্রেক্ষিত করছি। (শূদ্র হতে বৈশ্যায় উৎপন্ন পুরুষের দ্বারা খদির কাষ্ঠের মুষলে চারি চক্ষু বিশিষ্ট কুকুরকে হত্যা করে অধ্বর্ষু এই যজুঃ-যো অবন্তং জিঘাংসতি তমভ্যমীতি বরুণঃ- যজমানকে বলাবে)। যে এই অশ্বকে হত্যা করতে ইচ্ছা করে, তাকে বরুণই হিংসা করুক। (সেই মৃত কুকুরকে বেত্রে বা বাঁশের চটাইয়ের উপরে ধরে অশ্বের নিম্নে জলে নিক্ষেপনীয়)। অশ্বকে হত্যায় ইচ্ছাশীল মনুষ্য দূর হয়েছে কুকুর দূর হয়েছে।

দ্রষ্টব্যঃশুক্ল যজুর্বেদ(২২/৫),অনুবাদঃদূর্গাদাস লাহিড়ী



★পয়েন্ট (৪)★

ঋগ্বেদ(১/১৬২) সূক্তে অশ্বকে বলি দেওয়া হয়েছে সায়ণ ভাষ্য অনুসারে আবার মহিধরের শুক্লযজুর্বেদ ভাষ্যের অনুবাদক দূর্গাদাস লাহিড়ীর অনুবাদে পাওয়া যায়-"অশ্বকে সর্বথা রক্ষা করো" এবং "যে অশ্বকে হত্যা করতে ইচ্ছা করে তাকে বরুণই হিংসা করুক" এমন বাক্য।এখন পৌরাণিকরা কোন বেদের কথা মেনে চলবে?

★পয়েন্ট(৫)★

ঋগ্বেদ(১/১৬২) সূক্তে যদি অশ্ব বলির বিধান মেনে নেওয়া হয় তবে যজুর্বেদ(২২/৫ এবং ১৯) মন্ত্রগুলোর বিরোধ করা হয়,কেননা সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ পাওয়া যায় "অশ্বকে সর্বথা অর্থাৎ সবসময়ই(নির্দিষ্ট ঋতুর উল্লেখ নেই) রক্ষা করতে হবে।যেখানে সায়ণাচার্য্য নিজেই বলেছেন " অধ্যয়ন,ব্রহ্মযজ্ঞ আদি বিষয়ে ঋগ্বেদই প্রাধান্যতা পাবে  এবং অর্থজ্ঞান যজ্ঞ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হয়ে থাকে তাই যজ্ঞ বিষয়ে যজুর্বেদের প্রাধান্যতা বেশী"!

দ্রষ্টব্যঃঋগ্বেদাভাষ্যভূমিকা,হিন্দি অনুবাদ,পৃষ্ঠাঃ৪



তাহলে পৌরাণিকরা কোনটা রেখে কোনটা মানবে?

দাবী —

★ঐতরেয় ব্রাহ্মণ(২/৬/১৮৪) তে পশু বলির উল্লেখ আছে★

👇



খণ্ডনঃ

উপরোক্ত দাবীটা খুবই হাস্যকর।প্রথমত ঐতরেয় ব্রাহ্মণের ২য় পঞ্জিকা,৬ষ্ঠ অধ্যায়ে ১৮৪ খণ্ডই নেই।না পড়ে অন্যকে কপি করলে যা হয় আর কি।আমরা যদি গঙ্গাপ্রসাদ উপাধ্যায়জীর ঐতরেয় ব্রাহ্মণের অনুবাদ দেখি সেখানে ২য় পঞ্জিকায় ৫ম অধ্যায়ে ৯ম  খণ্ড পর্যন্ত  দেখানো হয়েছে ৬ষ্ঠ অধ্যায়ই ছিল না।



তবে সায়ণভাষ্যের যে বাংলা অনুবাদ পাওয়া যায় (২/৬/৭) এ পশু হত্যার কথা আছে বলির কথা নয়,শুধু তাই নয় সেখানে আরও বলা হয়েছে পশুর সম্মুখভাগ এবং পশ্চাৎভাগ ছেদন করার যে বিধান তা শাস্ত্রবিধান অপেক্ষা অতিরিক্ত করা হয়।



বলি আর হত্যা কি এক?সায়ণ ভাষ্যের বাংলা অনুবাদেও কোথাও ১৮৪ নং খণ্ড নেই।তাহলে পৌরাণিক দাদা কি নতুন ঐতরেয় ব্রাহ্মণ নাজিল করার পরিকল্পনা করছেন নাকি?

দ্রষ্টব্যঃঐতরেয় ব্রাহ্মণ(২/৬/৭),অনুবাদঃশ্রীরামেন্দ্রসূন্দর ত্রিবেদী।

আবার এর পরের খণ্ডে অর্থাৎ ৮ম খণ্ডে বলি বিষয়ে বলা হয়েছে—

[পুরাকালে] দেবগণ পুরুষকে (মনুষ্যকে) পশুরূপে আলম্ভন (যজ্ঞে হনন) করিতে উদ্যত হইয়াছিলেন। সেই হননোদ্যুক্ত পুরুষ হইতে যজ্ঞভাগ পলায়ন করিল ও অশ্বে প্রবেশ করিল। সেইজন্য অশ্ব যজ্ঞযোগ্য হইল। অনন্তর যজ্ঞভাগ কর্তৃক পরিত্যক্ত সেই পুরুষকে দেবগণ সম্পূর্ণরূপে বর্জন করিলেন; সেই পুরুষ [তখন] কিম্পুরুষ হইল।তাঁহারা অশ্বের আলম্ভনে উদ্যত হইলেন। সেই হননো- দ্যুক্ত অশ্ব হইতে যজ্ঞভাগ পলায়ন করিল ও গরুতে প্রবেশ করিল। সেই হইতে গরু যজ্ঞের যোগ্য হইল। দেবগণ সেই যজ্ঞভাগ কর্তৃক পরিত্যক্ত অশ্বকে বর্জন করিলেন; সেই অশ্ব [তখন] গৌর-মৃগ হইল।তাঁহারা গরুর আলম্ভনে উদ্যত হইলেন। সেই বধো- দ্যুক্ত গরু হইতে যজ্ঞভাগ পলায়ন করিল ও অবিতে (মেষে) প্রবেশ করিল। সেই হইতে অবি যজ্ঞের যোগ্য হইল। তখন দেবগণ যজ্ঞভাগ কর্তৃক পরিত্যক্ত গরুকে বর্জন করি- লেন; সে গবয় হইল।তাঁহারা অবির আলম্ভনে উদ্যত হইলেন। সেই বধো- দ্যুক্ত অবি হইতে যজ্ঞভাগ পলায়ন করিল ও অজে (ছাগে) প্রবেশ করিল। সেই হইতে অজ যজ্ঞের যোগ্য হইল। দেবগণ যজ্ঞভাগ কর্তৃক পরিত্যক্ত অবিকে বর্জন করিলেন; সে উষ্ট্র হইল।

দ্রষ্টব্যঃঐতরেয় ব্রাহ্মণ(২/৬/৮),অনুবাদঃশ্রীরামেন্দ্রসূন্দর ত্রিবেদী।



★পয়েন্ট (৬)★

যজ্ঞে পশুবলি নিয়ে ঐতরেয় ব্রাহ্মণের (২/৬) এর ৭ম এবং ৮ম খণ্ডগুলোর সায়ণ ভাষ্য বা তার বাংলা অনুবাদ পড়লে একজন ছোট বাচ্চারও হাসি পেয়ে যাবে।তাই এই প্রমাণ দিয়ে পশুবলি সিদ্ধ করা কেবল হাস্যকর ছাড়া কিছুই নয়।

দাবী—

★ব্রহ্মসূত্র(৩য় প্রপাঠকের ১ম অধ্যায়ের ২৫ নং সূত্রে পশুবলির কথা বলা হয়েছে★

👇



খণ্ডনঃ

প্রথমেই বলে রাখা উচিত বেদান্ত দর্শন বা ব্রহ্মসূত্রে "প্রপাঠক" হয় না।তাই আগে রেফারেন্স কিভাবে দেয় সেটা সঠিকভাবে জেনে রাখা উচিত।বেদান্ত দর্শনে হয় "(অধ্যায়/পাদ/সূত্র)"!

ব্রহ্মসূত্র(৩/১/২৫) এ শঙ্করভাষ্যে পশুহিংসাযুক্ত অগ্নিষ্টোম যজ্ঞ অশুদ্ধ, এমন মান্যতাকে সঠিক নয় বলা হয়েছে।ব্রহ্মসূত্র(৩/১/২৫) শঙ্করভাষ্যের খণ্ডন জানতে নিচের লিঙ্কে প্রবেশ করুন।

লিঙ্কঃ

https://www.facebook.com/share/p/Bxi5MkpSm8X7whmU/

বিচারঃ

উপরোক্ত যুক্তি এবং প্রমাণ দ্বারা এটিই সিদ্ধ হয় যে,বেদে পশুবলি নিয়ে পৌরাণিকরা যে প্রমাণ তুলে ধরেছে তা কেবল একপাক্ষিক বিচার।পৌরাণিক মান্যতার একজন বিদ্বান অন্যজনের মান্যতাকে খণ্ডন করে আর সেটাই নাকি সকল সনাতনীদের মানতে হবে।

......তা হবে না,তা হবে না......

🕉️🕉️🕉️🕉️🕉️🕉️🕉️🕉️🕉️

ও৩ম্ কৃণ্বন্তো বিশ্বমার্যম্

✍️অরুপ আর্য

🙏অমৃতস্য পুত্রাঃ🙏

Post a Comment

1Comments

Please Select Embedded Mode To show the Comment System.*