অপপ্রচারের খণ্ডণ
ম্লেচ্ছদের আক্ষেপ : হিন্দু ধর্মে নারীদের প্রতি ঘৃণ্যতা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রমাণ- নারীদের সাথে কোনো স্থায়ী বন্ধুত্ব হতে পারে না। নারীদের হৃদয় হচ্ছে হায়েনাদের হৃদয়৷ (ঋগ্বেদ-১০:৯৫:১৫)
কেবল সনাতন ধর্মেই নারীদের সর্বোচ্চ সম্মানীয় মর্যাদা দেওয়া হয়েছে আর নারীরা তাদের নিজ কার্য্য গুণেই সেই পদ প্রাপ্ত হওয়ার যোগ্য। সনাতন ধর্ম অন্য কোন ম্লেচ্ছ মত-পথের মতো নারীদেরকে মালিকানাধীন জমি কিংবা ভোগ্য পণ্য বলে শিক্ষা দেয়না। যদি কারো মনে হয় যে কোন মত-পথেই এমন শিক্ষা দেয়না তাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ রইলো যে- আসুন বিতর্কে, যা বলেছি তার প্রমাণ দিতে না পারলে ঐ মত গ্রহণ করে নিবো অন্যথা বিতার্কিক ব্যক্তি সনাতন বৈদিক ধর্ম ধারণ করতে হবে। যে ধর্মে এরূপ শিক্ষা দেওয়া হয় -
পূজ্যা লালয়িতব্যাশ্চ স্ত্রিয়ো নিত্যং জনাধিপ!
স্ত্রিয়ো যত্র হি পূজ্যন্তে রমন্তে তত্র দেবতাঃ॥
অপূজিতাশ্চ যত্রৈতাঃ সর্বাস্তত্রাফলাঃ ক্রিয়াঃ।
তদা চৈতৎ কুলং নাস্তি যদা শোচন্তি জাময়ঃ॥
(মহা০ অনুশাসনপ০ অ০ ৪৬/৫,৬)
স্ত্রীরা (নারীরা) নিত্য সম্মান করার যোগ্য, পূজন ও লালন করার যোগ্য, যে পরিবার, কুল, সমাজ, রাষ্ট্রে স্ত্রীদের (নারীদের) পূজা করা হয় সেখানে দেবতাদের তথা দিব্যগুণের নিবাস হয়। যে পরিবার, কুল, সমাজ বা রাষ্ট্রে স্ত্রীদের (নারীদের) অসম্মান করা হয়, সেখানে সকল ক্রীয়াই ফলহীন হয়। যে কুলে যখন স্ত্রীরা (নারীরা) দুঃখী থাকে তখন সেই কুল নাশপ্রাপ্ত হয়েছে জানা উচিৎ। সেই ধর্মে নারীদের প্রতি ঘৃণ্যতা কখনোই শিক্ষা দিতে পারেনা। ম্লেচ্ছদের রেফারেন্সকৃত মন্ত্রটির পদার্থ ও ভাবার্থ সহ অর্থ নিম্নরূপ -
পুরূরবো মা মৃথা মা প্র পপ্তো মা ত্বা বৃকাসো আশিবাস উ ক্ষন্।
ন বৈ স্ত্রৈণানি সখ্যানি সন্তি সালাবৃকাবাং হৃদয়ান্যেতা।। (ঋগ্বেদ-১০/৯৫/১৫)
পদার্থঃ- (পুরূরবঃ) হে বহুবাদী! [বহু প্রজার শাসক] তুমি (মা মৃথাঃ) মৃত্যুকে প্রাপ্ত হয়োনা (মা প্র প্রপ্তঃ) কোনভাবে পতিত হইও না (অশিবাসঃ বৃকাসঃ) অকল্যাণকারী, হিংসক/হিংস্র নেকড়ের ন্যায় স্বভাবী পুরুষ (মা ত্বা উ ক্ষন্) তোমায় যেন না খায়, তোমায় যেন বিনাশ না করতে পারে ! তুমি ইহা স্মরণে রেখো (স্ত্রৈণানি সখ্যানি) স্ত্রী ও অন্যান্য পদার্থ আদি ভোগ করার উদ্দ্যেশ্য নিয়ে মৈত্রিভাব আদি (ন বৈ সন্তি) বাস্তবিক [সত্যিকারের মৈত্রিভাব] হয়না (এতা) ইহা তো (সালাবৃকাণাম্) জঙ্গলি হিংসক কুকুর, নেকড়ে আদির (হৃদয়ানি) হৃদয়ের ন্যায় ছল ও ক্ররতাদি পূর্ণ হয়। রাজ্য সমৃদ্ধি আদির জন্য সন্ধি আদি করেও লোক একে অন্যের প্রাণ-নাশের যোজনা করে। অতএব সাবধান হয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখো।
ভাবার্থঃ- মনুষ্য কামনায় আসক্ত হয়ে আত্মহত্যাও করে থাকে, নিজেকে মাংসাহারী পশুর নিকটেও সমর্পিত করে থাকে, এমনটা করা উচিত্ নয়, ইহা জীবনের সফলতা নয় আর স্ত্রী ও অন্যান্য পদার্থের প্রতি ভোগাসক্ত হয়ে কামবশত কারো সহিত মৈত্রিভাব [ভালোবাসা] চিরস্থায়ী হয়না, অপিতু ইহা আক্রমণকারী [হিংসক] কুকুর, নেকড়ে আদির ন্যায় জীবননাশী হয়, কিন্তু সদ্-গৃহস্থ হয়ে সন্তান উৎপত্তির লক্ষ্য রাখো।
[পণ্ডিত জয়দেব শর্মা বিদ্যালঙ্কার, ব্রাহ্মমুনি পরিব্রাজক ]
মন্ত্রটিতে কিন্তু কোন নারীর সহিত বন্ধুত্ব করতে বারন করেনি তথা নারীর হৃদয়কে হায়েনার সাথেও তুলনা করেনি। বরং বলা হয়েছে নারীর প্রতি কামভাব রেখে ভোগ করার প্রয়াসে সখ্যভাব করিওনা, এটা মনুষ্যত্ব নয় ইহা পশুত্ব।
©️ অমৃতস্য পুত্রাঃ
