সনাতন শব্দটি কি বৌদ্ধদের থেকে চুরি করা?

0

 

সনাতন শব্দটি কি বৌদ্ধদের থেকে চুরি করা?

নমস্তে সকলকে

কিছু কিছু ব্যক্তি অন্যকে কপি করে করে নিজের পেইজে পণ্ডিতি করছে,তাদের মধ্যে একজন হচ্ছে ব্রাদার রাহুল!তিনি সনাতন ধর্মের সব গ্রন্থ পড়ে ফেলেছেন,শুধু তাই নয় ত্রিপিটকও পড়ে ফেলে দিয়েছেন।শেষ পর্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সহিত এটিও বলেছেন যে,"সনাতন শব্দটি সনাতনীরা বৌদ্ধদের থেকে চুরি করেছে"!তার বলা কথাগুলো একটু শুনে আসি চলুন-

কি অবাক হলেন?অবাক হওয়ার কিছুই নেই!কারণ,তিনি এমনই মিথ্যাকথা স্পষ্ট এবং চতুরতার সহিত বলতে পারেন।"সনাতন" শব্দটি সনাতন ধর্মের শাস্ত্রগুলোতে অনেকবার এসেছে।সনাতন ধর্মের শাস্ত্রগুলোতে যে "সনাতন" শব্দটি আছে তা আপনারা নিচের ভিডিওটি দেখলেই বুঝতে পারবেন!।

আমরা প্রথমেই কিছু ঐতিহাসিক বিষয় সম্পর্কে জেনে আসি,যা দ্বারা এই লেখাটা বুঝতে সুবিধা হবে।যেহেতু বর্তমানে অনেকেই গুগল পণ্ডিত,তাই গুগল থেকেই কিছু জেনে নেওয়া যাক।

ত্রিপিটকের ভাষার সময়কালঃ-

বেদের ভাষার সময়কালঃ-


১ঃত্রিপিটকের ভাষা(পালিভাষা) এর সময়কাল হল (৬০০-৫০০) খ্রিষ্টপূর্বাব্দ।

বেদের ভাষা(বৈদিক সংস্কৃত) এর সময়কাল ১৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ।

ত্রিপিটক লিপিবদ্ধ হওয়ার সময়কালঃ-

বেদের লিপিবদ্ধ হওয়ার সময়কালঃ-

২ঃত্রিপিটক লিপিবদ্ধ হওয়ার সময়কালঃ-খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকে।

বেদের লিপিবদ্ধ হওয়ার সময়কালঃ-


ঋগ্বেদ(১৫০০-১১০০)খ্রিষ্টপূর্বাব্দ,অথর্ববেদ(১০০০-৮০০) খ্রিষ্টপূর্বাব্দ।

বিচারঃত্রিপিটকেরও পূর্বে "বেদ" ছিল এটি ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত।তাহলে প্রশ্ন হল বেদে উল্লেখিত শব্দগুলো কি করে ত্রিপিটক হতে আসে?

প্রচলিত একটি কথা আছে যে,"চোরে চোরে মাসতুতো ভাই,ধরা খাইলে জামিন নাই"!চলুন চোরই না হয় ধরার চেষ্টা করি!আমরা উপরোক্ত প্রমাণ দ্বারা বুঝতে পারি যে,বেদে কোন শব্দই ত্রিপিটক থেকে নেওয়া হয়নি।এমনকি সংস্কৃত ভাষার কোন শব্দই পালি ভাষার নয়। কারণ,ত্রিপিটক বেদের পরেই এসেছে।ত্রিপিটক কি বলে দেখা যাক-

ত্রিপিটক,সূত্রপিটক,দির্ঘকিনায়(১ম খন্ড),সূত্রঃ২৫৬,পৃষ্ঠাঃ১০৬

বিচারঃত্রিপিটকে মন্ত্র,বেদ,নির্ঘন্ট এগুলো কি প্রকারে আসলো?খটকা লাগে না?

আরো কিছু দেখে আসি!

ত্রিপিটক,সূত্রপিটক,খুদ্দকানিকায় মহানির্দেশ,অষ্টক বর্গ,কামসূত্র বর্ণনা,সূত্রঃ৩
ত্রিপিটকে ব্রাহ্মণ,ক্ষত্রিয়,বৈশ্য এবং শুদ্র এই শব্দগুলো কোথা থেকে আসলো?

এবার বেদ কি বলে চলুন দেখি-


ব্রহ্ম॑ণে ব্রাহ্ম॒ণং ক্ষ॒ত্রায়॑ রাজ॒ন্যং ম॒রুদ্ভ্যো॒ বৈশ্যং॒
 তপ॑সে॒ শূ॒দ্রং তম॑সে॒ তস্ক॑রং নার॒কায়॑ বীর॒হণং॑ 
পা॒প্মনে॑ ক্লী॒বমা॑ক্র॒য়ায়া॑ঽঅয়ো॒গূং কামা॑য়
 পুঁশ্চ॒লূমতি॑ক্রুষ্টায় মাগ॒ধম্॥
যজুর্বেদ(৩০/৫)

বিচারঃবেদে যে শব্দ পাওয়া গেছে তা আবার ত্রিপিটকেও পাওয়া গেছে।ত্রিপিটকে বেদের শব্দগুলো কিভাবে আসলো?

এখনো শেষ হয় নি,সবে শুরুই হয়েছে মাত্র!

চলুন আবারও চোর পুলিশ খেলা যাক-


ত্রিপিটক,,সূত্রপিটক,খুদ্দকানিকায় মহানির্দেশ,অষ্টক বর্গ,কামসূত্র বর্ণনা,সূত্রঃ৬,পৃষ্ঠাঃ৪৪

"আর্য" শব্দটিও দেখি ত্রিপিটকে পাওয়া যায়!

এবার বেদে দেখি-

ঋগ্বেদ(৯/৬৩/৫)

বিচারঃবেদের সংস্কৃত ভাষা তো ত্রিপিটকে পাওয়া যাচ্ছে,তার মানে এটা নয় কি বেদ থেকেই এটি নেওয়া হয়েছে?

ধৈর্য্য ধরুন,এখনো শেষ হয় নি।

ত্রিপিটকে ইক্ষাকুর নাম।যা রামায়ণ এবং গীতাতেও পাওয়া যায়।

আগে ত্রিপিটকেরটাই দেখা যাক!

ত্রিপিটক,সূত্রপিটক,দীর্ঘনিকায়,১ম খন্ড,সূত্রঃ২৭৪,পৃষ্ঠাঃ১১২

আবার,রামায়ণের আদিকান্ড(৭০/২১) নং শ্লোকেও ইক্ষাকুর নাম পাওয়া যায় এবং তিনি ছিলেন মনুর পুত্র।

একইভাবে গীতা(৪/১) এ ও ইক্ষাকু নাম পাওয়া যায়।

উপরোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করলে বোঝা যায় যে,ত্রিপিটকে যে শব্দগুলো আছে তা বেদ হতেই নেওয়া।অথচ মুখস্ত করা বিদ্যা নিয়ে রাহুলের মত মূর্খরা মিথ্যাচার করেই যাচ্ছে।

বি.দ্রঃগুগলের অনুসারে আমরা বেদের সৃষ্টির সময় মান্যতা দিই না।কেবল গুগল পণ্ডিতদের গুগল জ্ঞানের দৌঁড় প্রমাণ করার জন্য এই বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।জ্ঞান অর্জন করুন,জ্ঞান আপনাকে এমন জায়গায় নিয়ে যাবে যা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না।তবে বিব্রত হওয়ার দরকার নেই,কারণ

"সত্যমেব জয়তে"

জয় শ্রীরাম                                জয় শ্রীকৃষ্ণ

🖋️অরূপ আর্য ।

আর্য প্রতিনিধি সভা বাংলাদেশ

Post a Comment

0Comments

Please Select Embedded Mode To show the Comment System.*