বিষ্ণুর বিষয়ে ব্রহ্মবৈবর্ত্তপুরাণে বলা হয়েছে যে, তিনি শঙ্খচূরের রূপ ধারণ করে তুলসীর সাথে মিলিত হয়ে তাহার গর্ভে বীর্য্যাধান করেন। তুলসী প্রথমে বুঝতেই পারেনি যে তিনি তার স্বামী শঙ্খচূড় নয়, পরে যখন বুঝতে পারে তখন তাকে জিজ্ঞাসা করেন যে - তুমি কে, তুমি মায়াবলে আমাকে উপভোগ করিয়া আমার সতীত্ব নষ্ট করিয়াছ, তুমি যেই হও তোমাকে অভিসম্পাত করিবো। তদন্তর অভিশাপের ভয়ে বিষ্ণু নিজ রূপ ধারণ করেন।
(ব্রহ্মবৈবর্ত্ত পুরাণ, প্রকৃতিখণ্ড, একবিংশ অধ্যায়)
স্কন্দ পুরাণ/ বিষ্ণুখণ্ড/ কার্ত্তিক মাসের মাহাত্ম্য কথন/ ২০-২১ অধ্যায়েও একইরকম কুকর্ম করার উল্লেখ পাওয়া যায়। সেখানে উল্লেখ আছে যে - জলন্ধরের রূপ ধারণ করে জলন্ধরের স্ত্রী বৃন্দার সাথে মিলিত হয়েছে। তুলসী যেমন প্রথমে বুঝতে পারেনি তেমনই বৃন্দাও প্রথমে বুঝতে পারেনি। যখন বুঝেছে তখন অভিশাপ দিয়েছে।
ছলনা করে বিষ্ণু এরূপ করেছে, অবশ্য দেবীভাগবতে বলাও হয়েছে- ভগবান্ ব্রহ্মা, বিষ্ণু, ইন্দ্র তথা অন্য সকল মহান দেবতাগণ - সকলে ছলকার্য্যে নিপুন..।
দেবীভাগবত-৪/১৩/১০
এইসবকে আপনি কি বলবেন? লীলা, যুদ্ধ নাকি ধর্ষণ? এতেই কিন্তু তিনি সীমাবদ্ধ নয় এসব করে পুত্রপর্যন্ত উৎপন্ন করেছেন ।শিবপুরাণে উল্লেখ আছে –
এতস্মিন্নন্তরে বিষ্ণুর্দর্শামৃতসম্ভবাঃ ।
কান্তাঃ পূর্ণেন্দুবদনা দিব্যলাবণ্যগর্বিতাঃ ॥৪৫॥
সম্মোহিতঃ কামবাণৈর্লে থে তত্রৈব নির্বৃত্তিম্ ।
তাভিশ্চ বরনারীভিঃ ক্রীডমানো বভূব হ ॥৪৬॥
এর মধ্যেই তিনি [বিষ্ণুর ভয়ে পাতালে পালিয়ে যাওয়া দৈত্যদের পিছু করতে গিয়ে] সেখানে অমৃত থেকে উৎপন্না পূর্ণচন্দ্রের সমান মুখের অধিকারী তথা সৌন্দর্য দ্বারা গর্বিত নারীদের দেখে এবং তিনি মোহিত হয়ে সেখানেই তাদের সাথে ক্রীড়া বিহার করতে থাকেন এবং সেখানেই শান্তি প্রাপ্ত হয়।
তাভ্যঃ পুত্রানজনয়দ্বিষ্ণুর্বরপরাক্রমান্ ॥৪৭॥
(শিবপুরাণ,শতরুদ্রসংহিতা-২২/৪৫-৪৭)
বিষ্ণু সেই স্ত্রীদের থেকে শ্রেষ্ঠ পরাক্রমশালী তথা যুদ্ধে নিপুণ অনেক পুত্র উৎপন্ন করেন।
শুধু তাহাই নয়, অন্যদেরও তা করার জন্য উপদেশ করেন তিনি -
সর্বং দেববরা যূয়ং মদ্বাক্যং শৃণুতাদরাৎ ।
কর্তব্যন্তত্তথা শীঘ্রং ততশ্শং বো ভবিষ্যতি ॥২৯॥
দিব্যা বরাঙ্গনাস্সন্তি পাতালে যৌবনান্বিতাঃ ।
তাভিঃ সার্দ্ধ মহাক্রীডাং কাময়েদ্যঃ করোতু সঃ॥৩০॥
(শিবপুরাণ,শতরুদ্রসংহিতা-২৩/২৯-৩০)
বিষ্ণু বলেন– শ্রেষ্ঠ দেবতাগণ আদরপূর্বক আমার কথা শুনুন আর শীঘ্র সেরূপই করুন তাতেই তোমাদের ককল্যাণ হইবে। পাতাল লোকে যৌবনে উন্মত্ত দিব্য নারীরা আছে, তাদের সাথে যার ইচ্ছা হয় সে মহাক্রীড়া করুন।
বিষ্ণু তো শুধু নারীদের সাথেই এইসব অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করেনি, সৌরপুরাণে উল্লেখ রয়েছে যে-
বিষ্ণু স্ত্রীরূপ ধারণ করে শঙ্করের সাথে মিলিত হয়েছে। আর মুনিপত্নীগণ শিবদর্শনে মদনানলদীপিত হইয়া লজ্জা এবং বস্ত্র পরিত্যাগ করে শিবের অনুগামিনী হইলো। অপরদিকে মুনিকুমারগণ কামবাণ-পীড়িত হইয়া স্ত্রীরূপধারী বিষ্ণুর অনুগামী হইল। এসব দর্শন করে মুনিগণ ক্রুদ্ধ হইয়া শিবকে লিঙ্গহীন এবং বিষ্ণুকে গোপবেশধারী করিলেন।
(সৌরপুরাণ-৬৯/৪৭-৫৩)
শিবও এদিকে পিছিয়ে থাকবে কেন?
তিনিও জেনে বুঝে..........(চলবে)
🖋️প্রিয়রত্ন বিদ্যার্থী
©️অমৃতস্য পুত্রাঃ