অষ্টাবিংশ ব্যাস

 অষ্টাবিংশ ব্যাস

দেবীভাগবতের উদ্ধৃতি দিয়ে পূর্বে লিখেছিলাম যে প্রত্যেক যুগে বিষ্ণু অবতার হয়ে আসেন পুরাণ রচনা আদি করার জন্য । দেবীভাগবতে আরো বলা হয়েছে যে, ২৭তম ব্যাস কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাসদেবের পূর্বে অবতীর্ণ হয়েছে, ভবিষ্যতে ২৯তম ব্যাস দ্রোণী নামক ব্যাস হবেন, অর্থাৎ বিষ্ণুর আটাশ  (২৮) অবতার হয়ে গিয়েছে তার কথন করা হয়েছে। সেই ব্যাসদেব গণের তালিকা-

১.প্রথমে  স্বয়ং ব্রহ্মা ব্যাসরূপে প্রকট হয়েছেন।
২.দ্বিতীয় দ্বাপরে 'প্রজাপতি'।
৩.শুক্রাচার্য।    ৪.বৃহস্পতি।    ৫.সূর্য।   ৬.যমরাজ।
৭.ইন্দ্র।    ৮.বশিষ্ঠমুনি।   ৯.সারস্বত।   ১০.ত্রিধামাজী।
১১.ত্রিবৃষ।  ১২.ভরদ্বাজমুনি।  ১৩.অন্তরিক্ষ।
১৪.ধর্মরাজ।  ১৫.ত্রয়্যারুণি।  ১৬.ধনঞ্জয়।  ১৭.মেধাতিথি।
১৮.ব্রতীমুনি।   ১৯.অত্রি।  ২০.গৌতম।   ২১.হর্যাত্মা 'উত্তম'।
২২.বাজশ্রবা বেন।   ২৩.আমুষ্যায়ণ সোম।  ২৪.তৃণবিন্দু।
২৫.ভার্গব।   ২৬.শক্তি।   ২৭.জাতুকর্ণ্য।   ২৮.কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাস।  (দেবীভাগবত-১/৩/২৬-৩৩)


কূর্মপুরাণে (কূর্মপুরাণ-৫০/১-৯)আবার কিছুটা ভিন্ন তালিকা–
১.মনু,  ২.প্রজাপতি,  ৩.শুক্রাচার্য,   ৪.বৃহস্পতি,   ৫.সূর্য,  ৬.মৃত্যু ,  ৭.ইন্দ্র,  ৮.বাসিষ্ঠ,   ৯.সারস্বত,  ১০.ত্রিধামা,  ১১.ত্রিবৃষ,  ১২.শততেজা,  ১৩.ধর্ম,  ১৪.তরক্ষু,  ১৫.ত্র‍্যারুণি,  ১৬.ধনঞ্জয়,  ১৭.কৃতঞ্জয়,  ১৮.ঋতঞ্জয়,  ১৯.ভরদ্বাজ,  ২০.গৌতম,  ২১.রাজশ্রবা,  ২২.শুষ্মায়ণ,  ২৩.তৃণবিন্দু,  ২৪.বাল্মীকি,  ২৫.শক্তি,  ২৬.পরাশর,  ২৭.জাতুকর্ণ,  ২৮.কৃষ্ণদ্বৈপায়ন।


বিষ্ণুপুরাণোক্ত (৩/৩/১১-১৯) ২৮ ব্যাসের তালিকা–
১.স্বয়ম্ভু,  ২.প্রজাপতি মনু,  ৩.উশনাঃ,  ৪.বৃহস্পতি,  ৫.সবিতা, ৬.মৃত্যু,  ৭.ইন্দ্র,  ৮.বসিষ্ঠ,  ৯.সারস্বত,  ১০.ত্রিধামা,  ১১.ত্রিবৃষা,  ১২.ভরদ্বাজ,  ১৩.অন্তরীক্ষ,  ১৪.বপ্রী,  ১৫.ত্রয়্যারুণ,  ১৬.ধনঞ্জয়,   ১৭.কৃতঞ্জয়,  ১৮.ঋণজ্য,  ১৯.ভরদ্বাজ,   ২০.গৌতম,  ২১.হর্য্যাত্মা,  ২২.বাজশ্রবা,  ২৩.তৃণবিন্দু,  ২৪.ভার্গবান্বয় ঋক্ষ [বাল্মীকি],  ২৫.শক্তি,  ২৬.আমি [পরাশর],  ২৭.জাতুকর্ণ,  ২৮.কৃষ্ণদ্বৈপায়ন।


লিঙ্গপুরাণোক্ত (পূর্বভাগ,চতুর্বিংশ অধ্যায়) ২৮ ব্যাসের তালিকা–
১.স্বয়ম্ভু,  ২.প্রজাপতি সদ্য,  ৩.ভার্গব,  ৪.অঙ্গিরা,  ৫.সবিতা, ৬.মৃত্যু,  ৭.শতক্রতু,  ৮.বসিষ্ঠ,  ৯.সারস্বত,  ১০.ত্রিপাদ্,  ১১.ত্রিব্রত,  ১২.শততেজা,  ১৩.নারায়ণ,  ১৪.তরক্ষু,  ১৫.ত্রয়্যারুণি,  ১৬.দেব,   ১৭.দেবকৃতঞ্জয়,  ১৮.ঋতঞ্জয়মুনি,  ১৯.ভরদ্বাজ,   ২০.গৌতম,  ২১.বাচশ্রবা,  ২২.শুষ্মায়ণ,  ২৩.তৃণবিন্দু,  ২৪.ঋক্ষমুনি,  ২৫.শক্তি,  ২৬.পরাশর,  ২৭.জাতুকর্ণ্য,  ২৮.কৃষ্ণদ্বৈপায়ন।


পূর্ববিভাগেরই সপ্ত অধ্যায়ের তালিকা–
১.ক্রতু,  ২.সত্য,  ৩.ভার্গব,  ৪.অঙ্গিরা,  ৫.সবিতা, ৬.মৃত্যু,  ৭.শতক্রতু,  ৮.বসিষ্ঠ,  ৯.সারস্বত,  ১০.ত্রিধামা,  ১১.ত্রিবৃত,  ১২.শততেজা,  ১৩.নারায়ণ,  ১৪.তরক্ষু,  ১৫.অরুণি,  ১৬.দেব,   ১৭.কৃতঞ্জয়,  ১৮.ঋতঞ্জয়,  ১৯.ভরদ্বাজ,   ২০.গৌতম,  ২১.বাচঃশ্রবা,  ২২.শুষ্মায়ণি,  ২৩.তৃণবিন্দু,  ২৪.রুক্ষ,  ২৫.শক্তি,  ২৬.পরাশর,  ২৭.জাতুকর্ণ্য,  ২৮.কৃষ্ণদ্বৈপায়ন।

পূর্বে পুরাণ থেকেই পুরাণের অনেক রচয়িতার নাম উদ্ধৃত করেছি, যা দেখে অনেকেই এটা ভেবে নিজেকে ও অন্যকে শান্তনা দিয়েছেন হয়তো, ব্যাসদেব তো কেবল একজন নয়, এটা একটা পদবি মাত্র। অর্থাৎ সেখানে যাদের নাম দেওয়া হয়েছে তারাও ব্যাসদেব। এটা কেবল মিথ্যা শান্তনা এবং নিজের সাথেই প্রতারণা। কেননা উক্ত তালিকায় সেখানে দেওয়া শিব, ব্রাহ্ম, শুকদেব, মার্কণ্ডেয়, অঙ্গিরা, তন্ডী, মহাদেব.... তাঁদের কারোর নামই নেই। তাছাড়া উক্ত তালিকার প্রত্যেক ব্যাস একেক দ্বাপরযুগে অর্থাৎ আলাদা আলাদা দ্বাপরযুগে এসেছে। কিন্তু পরাশরজী ও তাঁহার পুত্র কৃষ্ণদ্বৈপায়নজী একই দ্বাপরে এসেছিলেন....। কোথাও বলা হচ্ছে চতুর্থ দ্বাপরে বৃহস্পতি, কোথাও বলা হচ্ছে অঙ্গিরা। আবারা কোথাও বলা হচ্ছে ২১নং দ্বাপরে বাজশ্রবা, কোথাও বলা হচ্ছে ২২নং দ্বাপরে। কোথাও বলা হচ্ছে ২৫নং দ্বাপরে শক্তি, কোথাও বলা হচ্ছে ২৬নং দ্বাপরে। এরূপ কত মতভেদ রয়েছে এই তালিকাসমূহে।

📚পুরাণ বিমর্শ
©️অমৃতস্য পুত্রাঃ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

নবীনতর পূর্বতন