সদাচারী শূদ্রের উপনয়ন সংস্কার

 

সদাচারী শূদ্রের উপনয়ন সংস্কার

পারস্কর গৃহ্যসূত্রের ওপর আচার্য হরিহরের গুরুত্বপূর্ণ টীকা আজ উপলব্ধ। এই গ্রন্থের দ্বিতীয় কাণ্ডের পঞ্চম কণ্ডিকার ওপর ভাষ্য করতে গিয়ে হরিহর জী উপনয়ন সংস্কারের বিষয়তে আলোচনা করেন। 

এস্থলে আচার্য হরিহর জী আপস্তম্ব ধর্মসূত্রের প্রমাণ উদ্ধৃত করে লিখেন যে -

"শূদ্রাণামদুষ্টকর্মণামুপনয়নম্"

অর্থাৎ - যে শূদ্র দুষ্ট বা খারাপ কাজ করে না, তার উপনয়ন (যজ্ঞোপবীত) সংস্কার করা উচিৎ। তারপর তিনি আচার্য কল্পতরুর প্রমাণ উল্লেখ করে আরো স্পষ্ট করে বলেন যে " যে শূদ্র মদ্যপান করে না, তার উপনয়ন সংস্কার করা যায়"।।


পারস্কর গৃহ্যসূত্রের গদাধর ভাষ্যেও গদাধর জী আপস্তম্ব ঋষির প্রমাণ উদ্ধৃত করে সদাচারী শূদ্রের উপনয়ন হওয়া উচিৎ তা স্বীকার করেছেন।।



কল্পসূত্রে প্রক্ষিপ্ততা

প্রাচীন আচার্য হরিহর জী আপস্তম্ব ধর্মসূত্রের যে প্রমাণ উদ্ধৃত করেছেন, তাতে যে সূত্রটি এসেছে তা নিম্নরূপ -

"শূদ্রাণামদুষ্টকর্মণামুপনয়নম্"

অর্থাৎ - যে শূদ্র দুষ্ট বা মন্দ কাজ করে না, তার উপনয়ন সংস্কার যাবে।

কিন্তু বর্তমানে যে আপস্তম্ব ধর্মসূত্র পাওয়া যায় তাতে উক্ত সূত্রপাঠটি এইরূপ - "অশূদ্রাণামদুষ্টকর্মণামুপনয়নম্"।।

অর্থাৎ - যে শূদ্র নয় এবং দুষ্ট বা মন্দ কাজ করে না তার উপনয়ন হয়। এবার আপনিই দেখুন প্রাচীন আচার্যগণ নিজের সময়ে যে সূত্রপাঠ হতে প্রমাণ দিয়েছেন শূদ্রের উপনয়নের বিধান স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। 

কিন্তু পরবর্তীকালে কিছু ধূর্ত ব্যক্তিরা " শূদ্রাণাম" এর স্থলে "অশূদ্রাণাম" পাঠ যুক্ত করে মূলভাবই পরিবর্তন করে দেয়।।

সুতরাং প্রাচীন আচার্য আপস্তম্ব সদাচারী শূদ্রদের উপনয়ন সংস্কার স্বীকার করেছেন। যা প্রাচীন ভাষ্যকারগণ তাদের গ্রন্থাদির ভাষ্যে বলে গিয়েছেন। কিন্তু পরবর্তীতে ধূর্ত্তরা সেসব কথায় প্রক্ষেপ ঘটায়। তাই প্রকৃত বৈদিক চিন্তাধারাকে অনুসরণ করুন।।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

নবীনতর পূর্বতন