পুরাণ বিমর্শ (চতুর্দশ-পর্ব)

প্রিয়রত্ন বিদ্যার্থী
0
পুরাণ বিমর্শ চতুর্দশ-পর্ব 
পুরাণে "শ্রীকৃষ্ণ


     বিরজা– বিরজার সাথেও যখন শ্রীকৃষ্ণ সুখসম্ভোগ করছিলেন তখন চারজন দূতী বিদিত হইয়া রাধাকে জানান। রাধা এসব জেনে ক্রুদ্ধ হইয়া সেই স্থানে গমন করেন আর তা শ্রীকৃষ্ণের সহচর জানতে পেরে শ্রীকৃষ্ণকে জানিয়ে গোপগনের সাথে পলায়ন করেন। শ্রীকৃষ্ণ ভয়ে বিরজাকে ত্যাগ করে অন্তর্হিত হন। বিরজাও ভয়ে প্রাণ ত্যাগ করেন। 
            (ব্রহ্মবৈবর্ত্ত পুরাণ, প্রকৃতি খণ্ড, উনপঞ্চাশ অধ্যায়)

     কুব্জা– শ্রীকৃষ্ণ মথুরার শোভা দর্শন করিতে করিতে গমনকালে পথিমধ্যে অতি জরাতুরা বৃদ্ধা কুব্জাকে দর্শন করিলেন, সে দণ্ড-সাহায্যে অতি নম্র হইয়া গমন করিতেছে। সেই বৃদ্ধা কুব্জা শ্রীকৃষ্ণকে দর্শন করিয়া প্রণামপূর্বক শ্যামকলেবরে স্বর্ণপাত্রস্থ চন্দন বিলেপন করিলেন। সঙ্গিদের গাত্রেও চন্দন বিলেপন করিয়া শ্রীকৃষ্ণকে প্রদক্ষিণপূর্বক প্রণাম করতে লাগিল। পরে শ্রীকৃষ্ণের দৃষ্টিমাত্রে কুব্জা সহসা রূপ ও যৌবনে লক্ষ্মীর সমান সৌন্দর্য্যশালিনী হইলেন। দেখতে ১২বছরের কন্যার মতো লাগছিলো। তাহার ওষ্ঠ বিম্বফলতুল্য, বর্ণ তপ্তকাঞ্চনসন্নিত, শ্রোণি ও দন্তপঙক্তি অতি মনোহর এবং পয়োধরযুগল বিল্বফল সদৃশ হইল। তখন রতিকর্ম্মানিপুণা রত্নদর্পণহস্তা কুব্জা, চঞ্চলকটাক্ষ বিক্ষেপ করত শ্রীকৃষ্ণের প্রীতি সম্পাদন করিতে লাগিল। তৎকালে শ্রীকৃষ্ণ আশ্বাস প্রদান-পূর্বক স্থানান্তরে গমন করিলে, কুব্জা স্বভবনে গমন করিল। সে তার ভবনে গিয়ে দেখলো অসংখ্য দাসদাসী ও রত্নাদিতে ভরপুর। কুব্জা তথায় গমনান্তে মিষ্টান্ন ভোজন পূর্বক রত্নপর্য্যঙ্কে শয়ন করে দাসীগণকর্ত্তৃক সেবিতা হইতে লাগিল। তৎকালে কুব্জা কামাসক্তা হইয়া নিরন্তর কোটিকন্দপের ন্যায় মনোহর কামুক হরিরূপ-চিন্তাতেই নিমগ্না হইল। অন্যদিকে গমনকালে শ্রীকৃষ্ণ এক রজককে দেখে বস্ত্র প্রার্থনা করিলে সে বলেন- অহে মূঢ় গোপজনবল্লভ! এইসব বস্ত্র রাজার যোগ্য, গোরক্ষকের জন্য নহে। অরে কন্যা-লোলুপ! লম্পট, বৃন্দাবন অরাজক বলিয়াই তথায় গোপকন্যাদিগের সহিত বিহার করিয়াছ ; কিন্তু এই কংসরাজমার্গে পারিবে না, কারণ এখানে রাজেন্দ্র বিদ্যমান। এসব শুনে শ্রীকৃষ্ণ চপেটাঘাতে রজকে নিহত করিয়া তাহার বস্ত্রপুঞ্জ গ্রহণপূর্বক সঙ্গিগনকে পরিধান করাইলেন ও নিজেও পরিধান করিলেন। পরে অন্যত্র সঙ্গীরা মিষ্টান্ন ভোজন করে নিদ্রিত হইলেন। অন্যদিকে কুব্জাও নিদ্রিতা হইলে শ্রীকৃষ্ণ তাহার নিকটে গমন করে দেখেন দাসীগণ সহ কুব্জা নিদ্রিতা রহিয়াছে। তখন তিনি দাসিগণের নিদ্রা ভঙ্গ না করে কেবল কুব্জার নিদ্রা ভঙ্গ করত বলিতে লাগিলেন, মহাভাগে! নিদ্রা পরিত্যাপূর্বক আমায় শৃঙ্গার দান কর, সুন্দরি! তুমি পূর্বে শূর্পণখা ছিলে। তুমি আমাকে লাভ করিবার নিমিত্ত তপস্যা করিয়াছিলে। এখন আমি কৃষ্ণরূপে জন্মগ্রহণ করিয়াছি, এক্ষণে তুমি আমার সহিত সুখসম্ভোগ করো। শ্রীকৃষ্ণ এইসব বলিয়া সেই কামুকী কুব্জাকে নগ্না করিয়া শৃঙ্গার ও চুম্বন করিতে লাগিলেন। তখন নবসঙ্গম-সঙ্গতা সেই কুব্জা, কমলার ন্যায় শ্রীকৃষ্ণকে ক্রোড়ে লইয়া তাঁহার গণ্ডস্থল চুম্বন করিতে লাগি- লেন।  নিরন্তর নানাপ্রকার শৃঙ্গার হইতে লাগিল। তৎকালে ভগবান্ কৃষ্ণ, তীক্ষ্ণ নখাঘাতে কুজার স্তনযুগল ও শ্রোণিমণ্ডল এবং দশনদ্বারা দংশন করিয়া অধরদেশ ক্ষত-বিক্ষত করিলেন। অনন্তর শ্রীকৃষ্ণ, নিশাবসানসময়ে বীর্য্যাধান করিলে সুন্দরী কুব্জা মূর্চ্ছাপন্না হইলেন। (সংক্ষিপ্ত) 
   (ব্রহ্মবৈবর্ত্তপুরাণ, শ্রীকৃষ্ণ-জন্মখণ্ড, দ্বিসপ্ততিতম অধ্যায়)

এমন লীলার ফলে রাধাও কিন্তু মূর্চ্ছিত প্রায় হইতেন। যেমন একদিন  নন্দ কৃষ্ণের সহিত বৃন্দানের সমীপে গোচারণ করতে গেলে বৃষ্টি  হয়। সেই সময় রাধা সেখানে উপস্থিত হয় এবং বিবিধ কথোপকথনের পর শ্রীকৃষ্ণকে নিয়ে দূরে কোথাও চলে যান।  সেখানে গিয়ে কৃষ্ণ নবযৌবনসম্পন্ন পুরুষে রূপান্তরিত হন এবং রাধার সাথে সঙ্গম করেন এর ফলে রাধা মূর্চ্ছিত প্রায় হইলেন, তাহার দিবারাত্রি জ্ঞান থাকিলো না। কামশাস্ত্রপারদর্শী কৃষ্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গদ্বারা রাধিকার প্রত্যঙ্গ আলিঙ্গন করত অষ্টবিধ শৃঙ্গার করিলেন। কামযুদ্ধ শেষে তিনি পুনঃ পূর্বের রূপে ফিরে আসেন। তারপর রাধিকা ব্যথিত হয়ে কৃষ্ণকে যশোদাকরে অর্পন করেন সেথায় গিয়ে।  কিন্তু  প্রতিদিনই বৃন্দাবনে রাসমণ্ডলে কৃষ্ণের সাথে রতিক্রীড়া করিতে লাগিলেন।  
          (ব্রহ্মবৈবর্ত্তপুরাণ, শ্রীকৃষ্ণজন্মখণ্ড, পঞ্চদশ অধ্যায়)

🖋️প্রিয়রত্ন বিদ্যার্থী
╔════ஜ۩۞۩ஜ════╗  
❣    * অমৃতস্য পুত্রাঃ *       ❣    
╚════ஜ۩۞۩ஜ════╝

Post a Comment

0Comments

Please Select Embedded Mode To show the Comment System.*